এ মৌসুমে দারুণ জমেছে বার্সেলোনার মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ অর্থাৎ এমএসএনের রসায়ন। এ ত্রিরত্নের বোঝাপড়া দারুণ হলে প্রতিপক্ষের কী অবস্থা হয়, চোখের সামনে তা দেখাই যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে এমএসএনের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ত্রিমুকুটের সামনে বার্সা। দলের এ সুসময়ে কিনা এমন সংবাদ—আগামী মৌসুমে বার্সার জার্সিতে না-ও দেখা যেতে পারে এ তিনের চোখধাঁধানো কারুকুরি!
এ মৌসুমে এখনো পর্যন্ত তিনজনের সম্মিলিত গোলসংখ্যা ১১৩টি। এর মধ্যে মেসি করেছেন ৫২টি, নেইমারের কাছ থেকে এসেছে ৩৭টি আর সুয়ারেজ করেছেন ২৪টি। মেসি নেইমার-সুয়ারেজকে পাস দিয়েছেন মোট ১৮টি। মেসি-সুয়ারেজকে নেইমার পাস দিয়েছেন ৯টি। নেইমার-মেসিকে সুয়ারেজ দিয়েছেন ১২টি। এর পরও কেন মেসি-নেইমার-সুয়ারেজের রসায়ন ভেঙে যাবে? কারণটা আর্থিক। জানিয়েছেন স্বয়ং বার্সার অর্থনৈতিক বিভাগের সহ-সভাপতি হাভিয়ের ফাউস।
এ মৌসুমে এখনো পর্যন্ত ব্যর্থতার পরাজয়ে না পুড়লেও আর্থিক অবস্থা নাকি খুব একটা ভালো নয় বার্সার। এ কারণে হয়তো আগামী মৌসুমে এ তিন মহাতারকার যেকোনো একজনকে বাধ্য হবে ইউরোপের অন্য কোনো ক্লাবকে বিক্রি করতে! এমনিতে উয়েফার আর্থিক স্বচ্ছতার নিয়ম চালু হওয়ার পর ইউরোপের প্রতিটি ক্লাবকে খরচ কমিয়ে দিতে হয়েছে। তার ওপর আবার এই তিন মহাতারকার বেতন বিরাট। মেসির বার্ষিক বেতন ৬ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার, নেইমারের ৩ কোটি ৩৪ লাখ ও সুয়ারেজের ২ কোটি ১৩ লাখ।
গুঞ্জন ভাসছে বাতাসে, বার্সা নাকি মেসি-নেইমার-সুয়ারেজকে এরই মধ্যে জানিয়েও দিয়েছে, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ বা ফরাসি লিগের ধনী ক্লাবগুলোর মতো ফুটবলারদের সাপ্তাহিক বেতন বাড়ানোর পরিকল্পনা বার্সার নেই। ফাউস একটি জার্মান পত্রিকায় এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আমরা এত বেশি বেতন দিতে পারব না।’ তবে এমএসএন ভাঙার ইচ্ছে না থাকলেও আর্থিক কারণটাই অনেক বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে পারে এখানে। ফাউস বললেন, ‘এটা চ্যালেঞ্জিং হবে আমাদের জন্য। তবুও আমরা চাচ্ছি মেসি, নেইমার, সুয়ারেজকে ধরে রাখতে। কিন্তু তাদের কেনার সামর্থ্য কোনো ক্লাবের থাকলে সই করাতে পারে।’
‘ক্লাব’ বলতে ফাউস ইঙ্গিত করেছেন চেলসি-পিএসজিকেই। আরও স্পষ্ট করে বললে নেইমার-সুয়ারেজ দুজনের একজনকে হয়তো ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছে বার্সা। মেসিকে যে বার্সা কিছুতেই ছাড়তে রাজি নয়, তার প্রমাণ ফাউসের মন্তব্যেই। মেসি বার্সা ছাড়বেন, এমন একটা গুঞ্জন উঠেছিল গত বছর। ফাউসের দাবি অনুযায়ী, সে সব স্রেফ ভুল-বোঝাবুঝি ছিল, ‘মেসি ঠিক আছে। আমি ফুটবল বুঝি না। এটা কেবল ভুল-বোঝাবুঝি ছিল। যে ব্যাপারে তার বাবা ও তাকে আমরা পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিয়েছি। এরপর আমরা নতুন চুক্তির ব্যাপারে সম্মত হয়েছি। এখন আমাদের ব্যাপারটি অংশীদারত্বের মতোই। আমরা তার বাজার দর বৃদ্ধি করতে সহায়তা করব। আর সে সহায়তা করবে বার্সার ব্রান্ডকে সুরক্ষা দিতে।’ তথ্যসূত্র: ডেইলি মেইল, মিরর।