পেট্রোলবোমা হামলার জন্য পুলিশকে দায়ী করে খালেদা জিয়ার দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ ধরনের মিথ্যা শুনলে হতভম্ব না হয়ে উপায় থাকে না।বুধবার বিকেলে সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে সংসদ নেতা একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “রমজানে মাস পবিত্র মাস, সংযমের মাস। বিএনপির নেত্রী মিথ্যাচার আমরা শুনলে তাজ্জব হয়ে যাই। সংযমের মাসে, পবিত্র মাসে এ ধরনের মিথ্যা কথা কীভাবে বলে?”
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য আয়োজিত এক ইফতার অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, তাদের আন্দোলনের সময় পেট্রোলবোমা হামলা থেকে শুরু করে বাসে আগুনের ঘটনাও পুলিশই ঘটিয়েছে।
এরই মধ্যে পুলিশ প্রধান খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
সংসদে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ যখন অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়ছে। ঠিক সেসময়ই কিছু মিথ্যাচার শুরু হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখজনক আমরা যখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, সেই সময় আমরা দেখেছি কীভাবে এদেশে মানুষের ওপর অত্যাচার জুলুম হয়েছে।”
বক্তব্যে নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি জোটের সহিংসতা এবং হরতাল অবরোধের নামে জ্বালাও-পোড়াওয়ের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “২০১৩ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে যে সহিংসতা… কত প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। কত মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। এর পর আবার ২০১৫ সালে জানুয়ারি থেকে শুরু হলো…। ৯৩ দিন এদেশের মানুষ অত্যাচারের শিকার হয়েছে।”
“আমরা দেখলাম বিএনপির নেত্রী ইফতার পার্টি করে, ইফতার পার্টিতে বসে কতগুলি মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যাচ্ছে, মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছে। যে পুলিশ বাহিনী দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করছে, মানুষের নিরাপত্তা দিচ্ছে, সারাদিন যারা পরিশ্রম করছে তাদেরও দোষারোপ করা শুরু করেছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “সকলে জানে বিএনপি-জামাত শিবির মিলে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছে। যার ফলে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। অথচ তিনি বলে দিলেন, এসব পেট্রোলবোমা পুলিশ মেরেছে। অগ্নিসংযোগ পুলিশ করেছে।”
প্রধানমন্ত্রী এসময় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের সহিংস কর্মসূচির কয়েকটি ছবিও সংসদে দেখান।
বিএনপি নিজের অপরাধ অন্যের উপর চাপাতে চাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমার মনে পড়ছে ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার কথা। খালেদা জিয়া বলেছিলো আমি নাকি ভেনিটি ব্যাগে করে বোমা নিয়ে নিজেই মেরেছিলাম। এভাবে মিথ্যা কথা বলা অভ্যাস। নিজের অপরাধ অন্যের ওপর চাপাতে চাচ্ছে।”
“৯৩ দিন উনি বসে থাকলেন অফিসে। আওয়ামী লীগ সরকার না হটিয়ে নাকি উনি ঘরে ফিরবেন না। উনাকে ঘরে ফিরতে হয়েছে, কোর্টে হাজিরাও দিতে হয়েছে।”
সংসদ নেতা খালেদাকে উদ্দেশ করে বলেন, “এখন রমজান বসে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। তাও রোজার সময়, ইফতারের মজলিশে। এর বিচার আল্লাহ করবেন।”