গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বুধবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের (সিটি কর্পোরেশন-২ শাখা) সহকারি সচিব এ.কে.এম আনিছুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নানকে বরখাস্তের আদেশ দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত নাশকতার মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হওয়ায় এ ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (জিসিসি) সহকারি সচিব নেজামুল জানান, মেয়র মান্নানকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশের কপি বুধবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে পাওয়া গেছে। বুধবার স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, অধ্যাপক এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় দায়েরকৃত ফৌজদারী মামলা নং [১০৪(১২)১৪] জি.আর নং ১৫৭১/১৪ এ অভিযোগপত্র গাজীপুর জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এর আদালতে গত ১২ মে গৃহীত হয়েছে। যেহেতু স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৯ (২০০৯ সালের ৬০ নং আইন) এর ধারা ১২ এর উপধারা (১) মোতাবেক সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বা কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ফৌজধারী মামলায় অভিযোগপত্র আদালত কর্তৃক গৃহীত হলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার বিধান রয়েছে। সেহেতু গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নানকে উল্লেখিত ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হল।
জানা গেছে, গত ২৭ ডিসেম্বর গাজীপুরে বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বড়বাড়ি এলাকায় সাংবাদিক বহনকারী একটি মাইক্রেবাস এবং একটি যাত্রীবাহি লেগুনা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাংবাদিক এমএ ফরিদ বাদী হয়ে অধ্যাপক এমএ মান্নান ও জেলা বিএনপির সভাপতি একেএম ফজলুল হক মিলনসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ১৫/২০ বিএনপি নেতাকর্মীর নামে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তদন্তের পর পুলিশ মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নান, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করে। গত ১২ মে ওই মামলার অভিযোগপত্র গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারজানা খান এর আদালতে গৃহীত হয়।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৪ ফেব্রæয়ারি রাতে গাজীপুরের সার্ডি গেইট এলাকায় যাত্রীবাহীবাসে পেট্রোলবোমা হামলার মামলায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার বারিধারার ডিওএইচএস’র নিজ বাসা থেকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (জিসিসি) মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মান্নানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর থেকে তিনি আদালতের নির্দেশে কারাগারে রয়েছেন। এ পর্যন্ত ১০ টি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এসব মামলার প্রায় সবগুলোই গত জানুয়ারি হতে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ ও হরতালকালে গাড়ী ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ, হত্যা, নাশকতা, বিস্ফোরক ও পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দানসহ বিভিন্ন আইনে দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দুইটি মামলায় অধ্যাপক এম.এ মান্নানের নামে চার্জশীট দাখিল হয়েছে। তার অবর্তমানে গত ৮ মার্চ থেকে প্যানেল মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।