গত তিন দিনের টানা বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে ডুবে গেছে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার ১০টি গ্রাম ও ফুলগাজী বাজারের প্রায় ৯০০ দোকানপাঠ।
এতে করে রাস্তা-ঘাট, অফিস-আদালত, দোকান-পাটে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফুলগাজীর মুহুরি ও পরশুরামের কহুয়া নদীর তিনটি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে ১০টি গ্রাম। ফেনী পরশুরাম আঞ্চলিক মহাসড়কে ফুলগাজী বাজার বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় ফুলগাজী সাথে পরশুরাম উপজেলার যান চলাচলে বিঘন ঘটছে। এছাড়া মুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার ৮০ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসন।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাত ৩ টার দিকে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙ্গে ফুলগাজী বাজারে পানি ঢুকে। ফুলগাজী বাজার বনিক সমিতির সভাপতি কবির আহাম্মদ বলেন, মুহুর্তের মধ্যে ফুলগাজী বাজারের ১২০০ দোকানপাঠের মধ্যে প্রায় ৯০০ দোকান ডুবে যায়। এতে ধান-চাল, মুদি দোকান, সিমেন্ট ও সারের দোকানগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি টাকা বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ফুলগাজীর মুহুরী নদীর উত্তর দৌলতপুরের সাহা পাড়া ও মধ্যে দৌলতপুর সেকান্দার মাষ্টারের বাড়ীর পাশে ভোর ৪টায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে উপজেলার উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর, সাহা পাড়া, বিজয়পুর, ঘনিয়ামড়া, জয়পুর,জগৎপুর, বসন্তপুর, উত্তর বরইয়া, দক্ষিণ বরইয়া, বৈরাগপুর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোঃ মাহিদুর রহমান জানান, বর্তমানে মুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার ৮০ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, ফুলগাজী উপজেলা সদরের বাজারের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ফাটল ধরে ডুবে গেছে ফুলগাজী উপজেলা শহরের ৯০০টি দোকান। গত কাল শনিবার দুপুরে উপজেলার প্রশাসনের উদ্যোগে ৫০০ জন ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল আলীম বন্যার ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ব্যপক ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের আশ্বাস দেন।
পরশুরাম উপজেলার কহুয়া নদীর বৈরাগপুর নামক স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে বৈরাগপুর ও কহুয়া গ্রাম প্রাবিত হয়েছে।
অপরদিকে ভারি বর্ষনে ফেনী সদরের শহীদ শহিদুল্লা কায়সার সড়ক, কলেজ রোড, স্টেশান রোড, সদর হাসপাতাল রোড সহ শহরের বহু এলাকা ডুবে যায়।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবি) নির্বাহী প্রকৌশলী রমজান আলী প্রামানিক জানান, অতিরিক্ত ভারি বর্ষণে মুহুরী ও কহুয়া নদীর তিনটি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। পানি শুকিয়ে গেলে অল্প সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ মেরামত করা হবে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে পানি নামতে সময় লাগবে বলে তিনি জানান।